আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda Question and Answer

429
আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda Question and Answer
আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda Question and Answer
Contents hide
3 আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | West Bengal Class 11 Bengali Adda Question and Answer

আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda Question and Answer : নমস্কার, বন্ধুরা আজকের আলোচ্য বিষয় আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda Question and Answer নিচে দেওয়া হলো। এই আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা – Class 11 Bengali Adda থেকে MCQ, SAQ, Description Question and Answer, Notes গুলি আগামী একাদশ শ্রেণীর বাংলা পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট।

 আপনার যারা আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা – West Bengal WBCHSE Class 11 Bengali Adda Question and Answer খুঁজে চলেছেন, তারা নিচে দেওয়া প্রশ্ন ও উত্তর গুলো ভালো করে পড়তে পারেন।

বোর্ডডাব্লিউ বি সি এইচ এস ই (WBCHSE)
ক্লাসএকাদশ শ্রেণী (WB Class 11)
বিষয়একাদশ শ্রেণীর বাংলা
পাঠআড্ডা (প্রবন্ধ)

সংক্ষিপ্ত : আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda [প্রশ্নমান – ২]

১. কায়রোবাসীদের সঙ্গে আড্ডার সম্পর্ক নিয়ে লেখক কী জানিয়েছেন?

উত্তরঃ প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর মতে, শতকরা নব্বই জন কায়রোর অধিবাসী আড্ডা দিতে পছন্দ করেন এবং তার ‘দশ আনা পরিমাণ’ অর্থাৎ সংখ্যাগরিষ্ঠই অর্ধেক জীবন কাটিয়ে দেয় কাফেতে বসে আড্ডা দিয়ে।

২. “আমাদের আড্ডা বসত…”-কোথায় লেখকদের আড্ডার জায়গা ছিল? এখানকার কী বর্ণনা লেখক দিয়েছেন?

উত্তরঃ প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী জানিয়েছেন যে কায়রো শহরে তাঁদের আড্ডা বসত ‘কাফে দ্য নীল’ বা ‘নীলনদ কাফে’তে।

  সেখানে কফির দাম ছিল পাত্র পিছু ছ-পয়সা এবং তা ছিল রাবড়ির মতো ঘন কিন্তু তাতে দুধের কোনো ব্যাপার ছিল না। সকলেই কালো কফি খেত এবং যাদের অভ্যাস ছিল না তারাও অল্প দিনে অভ্যস্ত হয়ে যেত।

৩. “সোজা বাংলায় বলে, জাতে উঠে গেলুম”-কোন্ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে লেখক এ কথা বলেছিলেন তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ ‘কাফে দ্য নীল’-এ নিয়মিত যাতায়াত করতে করতেই এক কোনায় প্রাবন্ধিক লক্ষ করেছিলেন বেশ কিছু আড্ডাবাজদের। লেখক যখন তাদের বোঝার চেষ্টা করছিলেন, তারাও সেই সময়ে লেখকের দিকে তাকিয়েছিল। এক ব্রহ্মমুহূর্তে উভয় পক্ষের মধ্যে এই দৃষ্টিবিনিময় আড্ডাবাজদের মধ্যে লেখকের গ্রহণযোগ্যতাকে সুনিশ্চিত করেছিল আর লেখক কৌতুক করে বলেছেন যে, তার ফলে তিনি জাতে উঠে গিয়েছিলেন।

৪. “খাস আরবী বলেন আপনি।”-কে, কাকে এ কথা বলেছিল? যাঁকে উদ্দেশ করে এ কথা বলা তাঁর মধ্যে এর কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল?

উত্তরঃ ‘কাফে দ্য নীল’-এর আড্ডার অন্যতম সদস্য জাতিতে ফরাসি এবং স্বভাবে কবি জুর্নো প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীকে উদ্দেশ করে মন্তব্যটি করেছে।

  এই প্রশংসা শুনে লেখক ‘আল্লা’-কে স্মরণ করে বলেছিলেন যে, তেরো দিনের আরবি জ্ঞানকে যারা চমৎকার বলে তারা নিশ্চিতভাবেই খানদানি মানুষ।

৫. “এদের সাহায্য ছাড়া মিশর তথা দুনিয়ার বাদবাকি সরকারগুলো চলছে কি করে”-মন্তব্যটির প্রেক্ষাপট উল্লেখ করো।

উত্তরঃ কায়রোতে লেখকের বাড়ির পাশে ছিল সেমিরামিস কাফে। সেখানে আড্ডার সদস্যরা সকলেই ছিলেন সবজান্তা এবং মিশর ও দুনিয়ার সব গোপন ও গরম খবর তাদের কাছে থাকত। যা দেখে বাড়ি ফেরার সময় লেখক ভাবতে থাকতেন যে, এদের সাহায্য ছাড়া পৃথিবীটা চলছে কীভাবে।

৬. “তারই নাম ইজিপশিয়ন সিগারেট।”-এর কী পরিচয় প্রাবন্ধিক দিয়েছেন লেখো।

উত্তরঃ পৃথিবীবিখ্যাত গ্রিক তামাক তুরস্কের মাধ্যমে মিশরে পৌঁছাত, কারণ তুর্কি তখন গ্রিসের উপর আধিপত্য কায়েম করেছিল এবং মিশরও ছিল তুর্কির কবজায়। মিশরে আসার পরে গ্রিক তামাকের নাম হয় ইজিপশিয়ন তামাক। এই তামাকের সঙ্গে মিশরের খাঁটি সুগন্ধি মিশিয়ে দক্ষ কারিগররা তৈরি করতেন ইজিপশিয়ন সিগারেট।

৭. “….পাচ্ছে, তামাকের গন্ধ এবং কিঞ্চিত স্বাদও নষ্ট হয়ে যায়।”-যে প্রসঙ্গে লেখক এ কথা বলেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ ইজিপশিয়ন সিগারেটের সুগন্ধকে রক্ষা করা ছিল খুব কঠিন বিষয়। মালবাহী জাহাজে মাল বোঝাই করা যে আধিকারিকের কাজ ছিল, তিনিও জানতেন যে জাহাজে কাঁচা তামাক বোঝাই করা থাকলে গন্ধওয়ালা অন্য কোনো জিনিস নেওয়া যাবে না। তামাকের গন্ধ ও স্বাদ বজায় রাখার এই প্রচেষ্টার কথা বলতে গিয়েই লেখক উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।

৮. “তার পিছনে রয়েছে গূঢ়তর, রহস্যাবৃত ইন্দ্রজাল।”-যে বিষয়ে লেখক এ কথা বলেছেন তা আলোচনা করো।

উত্তরঃ ইজিপশিয়ন সিগারেট তার সুগন্ধের জন্য পৃথিবীবিখ্যাত। তামাকের স্বাদ নষ্ট না করে সিগারেটকে খুশবুতে মজিয়ে তোলা অতীব কঠিন কর্ম। সে বিষয়ে বলতে গিয়েই লেখক উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।

৯. “মিশরীয়রাই একদিন সে কায়দা ভুলে মেরে দিয়েছিল…” কীসের কথা বলা হয়েছে লেখো।

উত্তরঃ কোন্ কৌশলে কিংবা কী কী উপকরণের সাহায্যে মিশরীয়রা তাদের মমিগুলোকে পচনের হাত থেকে রক্ষা করেছিল, একদিন মিশরীয়রা নিজেরাই সে কায়দা ভুলে গিয়েছে বলে লেখক মন্তব্য করেছেন।

১০. “আর শীতকাল হলে তো পোয়া বারো।”-কেন লেখক এ কথা বলেছেন?

উত্তরঃ শীতকালে কায়রো শহর একটি মনোরম স্থান। কায়রোতে বছরে

অতি সামান্য বৃষ্টি হয়, সাহারার শুকনো হাওয়া নাকি যক্ষ্মা রোগও সারিয়ে দেয়। পিরামিডের বাইরে বসে ফুর্তির ক্ষেত্রে কায়রো লাগামহীন। মসজিদ থেকে কবর পর্যন্ত কায়রো শহর সুন্দর। শীতকালে সেখানে না-গরম না-ঠান্ডা আবহাওয়া। সেই কারণে কায়রো শীতকালে ট্যুরিস্টদের ভূস্বর্গ।

১১. “তদুপরি মার্কিন লক্ষপতিরা আসেন নানা ধান্দায়।”- তাদের এই আশার ফলে কোন্ ঘটনা ঘটে?

উত্তরঃ মার্কিন ধনকুবেরদের কায়রোতে আসার ফলে তাদের সন্ধানে আসেন গোটা পৃথিবীর ডাকসাঁইটে সুন্দরীরা। সেই সুন্দরীদের সন্ধানে এখানে আসেন হলিউডের পরিচালকরা এবং তারা সঙ্গে নিয়ে আসেন আরও অনেক সুন্দরীকে।

১২. “কারণ আপনি এখানে আসেন কালেভদ্রে।”-কোন্ ঘটনার কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ আড্ডার শহর কায়রোতে নীলনদের ধারে কোনো এক কাফেতে ঠিক মাসে একদিন কিংবা দুদিন যান শহর থেকে মাইল তিনেক দূরের সেই কাফেতে গেলে তারা তাকে দুহাত তুলে অভ্যর্থনা করে। কারণ কালেভদ্রে সেখানে তার সাক্ষাৎ পাওয়া যায়।

১৩. “কিন্তু তাতে করে কোনো ফায়দা ওৎরায় না…”- মন্তব্যটির প্রসঙ্গ আলোচনা করো।

উত্তরঃ নীলনদের ধারে যে কাফেতে লেখক মাসে একদিন বা দু-দিন যেতেন সেখানে তাঁকে শুধু সাদর অভ্যর্থনাই করা হত না, বিভিন্ন বিষয়ে তাঁর মতামতও চাওয়া হত। গান্ধির দেশের লোক হওয়ায়, লেখক বারবার গান্ধির সঙ্গে প্রত্যক্ষ যোগাযোগের কথা অস্বীকার করলেও, তাঁর বিবেচনার উপরে সকলেই ভরসা রাখতেন।

১৪. “তফাৎ মাত্র এইটুকু যে…” -কীসের কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ পাল্লা, মদার, হিলসা দেশভেদে নামের ভিন্নতা থাকলেও আসলে তারা একটাই মাছ-ইলিশ; পার্থক্য শুধু রান্নায়। বাঙালি যেভাবে সরষে বাটা আর ফালি করা কাঁচা লংকা দিয়ে ইলিশ রান্না করে, তা অন্য কেউ পারে না। এই পার্থক্যের কথাই বলা হয়েছে।

১৫. “অর্থাৎ আড্ডা বহু দেশেই আছে”-এ বিষয়ে প্রাবন্ধিকের দৃষ্টিভঙ্গি কী?

উত্তরঃ বাঙালি আড্ডাপ্রিয় এবং বাঙালি মনে করে যে আড্ডায় তার একক অধিকার। প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী দেখিয়েছেন যে, আড্ডা বহু দেশেই আছে তবে হয়তো বাঙালির মতো করে আড্ডায় রসসৃষ্টি সকলে করতে পারে না। তবে এই প্রসঙ্গেই তিনি আরও ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, অন্য দেশের মানুষরা আবার বাঙালির রান্নার মতোই বাঙালির আড্ডা নিয়েও বিরূপ মনোভাব পোষণ করতে পারে।

১৬. “তাতে করে আড্ডার নিরপেক্ষতা-কিংবা বলুন গণতন্ত্র-লোপ পায়।”-এই মন্তব্যের কারণ কী?

উত্তরঃ কায়রোর মানুষেরা কখনোই কারোর বাড়িতে আড্ডা দিতে পছন্দ করে না। এক্ষেত্রে গৃহকর্তা যেহেতু অতিথি-আপ্যায়ন করেন, সে কারণে তাকে সবাই ‘তোয়াজ’ করে। ফলে আড্ডার নিরপেক্ষতা এবং গণতন্ত্র রক্ষিত হয় না।

১৭. “ঐ বস্তুটির প্রতি আমার মারাত্মক দুর্বলতা আছে।”- কীসের প্রতি প্রাবন্ধিক নিজের দুর্বলতার কথা বলেছেন? এই প্রসঙ্গে তিনি আর কী বলেছেন?

উত্তরঃ উল্লিখিত অংশে ইলিশ মাছের প্রতি প্রাবন্ধিক নিজের দুর্বলতার কথা বলেছেন।

  প্রাবন্ধিক বলেছেন যে, বেহেস্তের বর্ণনাতে ইলিশের উল্লেখ নেই বলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে সেখানে যাওয়ার বিন্দুমাত্র বাসনা তাঁর নেই।

১৮. “অকারণে অকালে আড্ডার গলায় ছুরি চালাতে পারেন না।” -মন্তব্যটির প্রসঙ্গ আলোচনা করো।

উত্তরঃ আড্ডাবাজ মিশরীয়রা কারোর বাড়ির পরিবর্তে কাফেতে আড্ডা দেওয়া পছন্দ করত। তার অন্যতম কারণ, এখানে আয়োজকের বাড়ির গিন্নি কখনও স্পষ্টভাবে, কখনও আভাসে-ইঙ্গিতে আড্ডার সদস্যরা দীর্ঘ সময় পরেও কেন বাড়ি যাচ্ছে না তা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করতে পারে না। এই প্রসঙ্গেই মন্তব্যটি করা হয়েছে।

১৯. “যেন পুরীর মন্দির”-পুরীর মন্দিরের উল্লেখের পরিপ্রেক্ষিত কী ছিল?

উত্তরঃ মিশরের কায়রো শহরের লোকেরা কোনো বাড়িতে আড্ডা দেওয়া পছন্দ করে না। কারণ, সেখানে অভ্যর্থনাকারী হিসেবে গৃহকর্তা বাড়তি খাতির পান। পরিবর্তে তাদের পছন্দ কাফে, কারণ এখানকার আড্ডায় কেউ কাউকে ‘খয়ের খাঁ’ বানাতে পারে না, অনেকটা ‘পুরীর মন্দির’-এর মতো, যেখানে জাতপাতের বৈষম্য নেই, সকলেই ভ্রাতৃপ্রতিম।

২০. “এবং সবচেয়ে বড় কথা…” -এই কথাটি কী ছিল?

উত্তরঃ কাফেতে আড্ডা দেওয়ার সুবিধার কথা বলতে গিয়ে প্রাবন্ধিক উল্লেখ করেছেন যে, কোনো কাফের আড্ডায় বাড়ির গিন্নি আড্ডাবাজরা কেন বাড়ি ফিরে যাচ্ছে না সে কথা কখনও সরাসরি, কখনও আভাসে-ইঙ্গিতে জানিয়ে “অকারণে অকালে আড্ডার গলায় ছুরি চালাতে পারেন না।”

২১. “… দু’দিনেই অভ্যাস হয়ে যায়।”-কীসের কথা বলা হয়েছে লেখো।

উত্তরঃ কায়রোর ‘কাফে দ্য নীল’-এ কফির দাম পাত্র প্রতি মাত্র ছ-পয়সা। রাবড়ির মতো ঘন কফি। কিন্তু কালো কফি। এই প্রসঙ্গেই লেখক বলেছেন যে, ঘাবড়ানোর কিছু নেই, অল্প দিনের মধ্যেই বিষয়টা অভ্যাস হয়ে যায়।

২২. “তাতে করে কাফের ‘গণতন্ত্র’ ক্ষুণ্ণ হত না”-কোন্ বিষয়ের দিকে এখানে ইঙ্গিত করা হয়েছে?

উত্তরঃ কায়রোতে ‘কাফে দ্য নীল’-এর আড্ডায় ছিল মার্কোস নামের এক গ্রিক। ব্যবসায় লাভ হয়েছে বলে সে কফি খাইয়ে দিত। কিন্তু এটা তার আধিপত্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা নয়। কারণ, আড্ডার তর্ক-বিবাদ থেকে নিজেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে রাখত সে। ফলে তার দেওয়া কফি খেলে গণতন্ত্র ক্ষুণ্ণ হত না।

২৩. “…এক থাবড়ায় ঝেড়ে ফেললেন, আমার অঙ্গ থেকে।” -লেখক যে প্রসঙ্গে এ কথা বলেছেন, তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ কায়রোর কাফের আড্ডার অন্যতম সদস্য জুর্নো লেখকের আরবি ভাষাজ্ঞানের প্রশংসা করেন। এর ফলে বিদেশি হিসেবে যে সংকোচ লেখকের মনের মধ্যে ছিল তা যেন দূর হয়ে যায়। এক মুহূর্তে তাঁর সমস্ত প্রবাস-লাঞ্ছনার অবসান হয়।

২৪. “দুম্ করে রমজান বে বললে…”-কী বলেছিলেন?

উত্তরঃ কায়রোতে ‘কাফে দ্য নীল’-এর আড্ডার অন্যতম সদস্য রমজান বে লেখককে বলেছিলেন যে, তাঁর মামা আগের বছর হজ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে কয়েকজন ভারতীয়র সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়। তারা ‘বিঙ্গালা’ বা ‘বাঙীলা’ নামে কোনো এক প্রদেশের। তারা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত আর বাকি সময় দিনরাত একটা চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিত।

২৫. “তবে হ্যাঁ, চিলিমটা দেখে ভক্তি হল”-এই ভক্তির কারণ কী ছিল?

উত্তরঃ কায়রোর কাফেতে হুঁকো দেখে লেখকের ভক্তি হয়নি। কিন্তু চিলিম তার মনোযোগ আকর্ষণ করে নেয় কারণ সেটার চেহারা ছিল বেশ বড়ো। এক পোয়া তামাক হেসে খেলে তার ভেতরে রাখা যেত।

বিশ্লেষণধর্মী : আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda [প্রশ্নমান – ৩]

১. “ভাবখানা ভুল লোককে বাহা হয়নি”-কারা, কেন এরকম ভেবেছিল?

উত্তরঃ কাফেতে আড্ডাবাজ যে মানুষেরা লেখককে দেখে নীরবে তাঁদের দলভুক্ত করেছিলেন, তাঁদের কথাই এখানে বলা হয়েছে।

   আড্ডার মানুষদের দৃষ্টিতে নিজের গ্রহণযোগ্যতা উপলব্ধি করে গর্বিত লেখক কফির অর্ডার দিয়েছিলেন এবং সেই সময় আড্ডার সদস্যরা একে অন্যের দিকে তাকিয়ে সন্তুষ্টির মৃদু হাসি হাসতে থাকেন। তাদের অভিব্যক্তি দেখে মনে হয়, তাঁরা ঠিক লোককেই তাদের দলভুক্ত করেছেন।

২. “কাফের ছোকরাটা পর্যন্ত ব্যাপারটা বুঝে গিয়েছে।”- ‘ছোকরা’ বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? সে কী বুঝে গিয়েছিল?

উত্তরঃ ‘কাফে দ্য নীল’-এর কফি পরিবেশক ছেলেটির কথা বলা হয়েছে।

   আড্ডাবাজ লোকেরা যে উপযুক্ত ব্যক্তিকেই তাদের দলে মনোনীত করেছে সেটা সে বুঝে নিয়েছিল এবং সেই জন্য কফি পরিবেশনের সময় লেখক যে ভালো টিপস দেন সে কথা বলে আড্ডার সকলের সামনে লেখকের পক্ষে বাতাবরণ তৈরির চেষ্টা করেছিল।

৩. “তাঁর কানে কিছু যাচ্ছিল কি না জানিনে।”-কার কথা বলা হয়েছে? তাঁর সম্পর্কে প্রাবন্ধিক কী ভেবেছিলেন?

উত্তরঃ ‘কাফে দ্য নীল’-এর আড্ডার গ্রিক সদস্য মার্কোস সম্পর্কে প্রাবন্ধিকের উল্লিখিত ভাবনাটি হয়েছিল।

  আড্ডার সদস্যরা যখন গল্প-গুজবে ব্যস্ত সেই সময়ে নবাগত সদস্য হিসেবে লেখক দেখেছিলেন যে মার্কোস অনেকটাই ভাবলেশহীন। একবারমাত্র ‘সালাম আলাইক’ বলে অভ্যর্থনা জানিয়ে তিনি খবরের কাগজে ডুব দিয়ে রয়েছেন। লেখক ভেবেছিলেন যে রাশভারী লোক, তাই হয়তো তিনি ভাবছেন যে নতুন সদস্যকে “জামাইয়ের মত কাঁধে তুলে ধেই ধেই করেই নাচতে হবে” সে-কথা আড্ডার সংবিধানে লেখা নেই।

৪. “স্বপ্ন নু মায়া নু মতিভ্রম নু?”-কথাটির অর্থ কী? কোন্ প্রসঙ্গে লেখক কথাটি বলেছেন?

উত্তরঃ “স্বপ্ন নু মায়া নু মতিভ্রম নু” কথাটির অর্থ-স্বপ্ন নয় মায়া নয় মতিভ্রম নয়।

  ‘কাফে দ্য নীল’-এর আড্ডার অন্যতম সদস্য গ্রিক মার্কোস ইঙ্গিতে কাউন্টারের পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা কাফের মালিকের কাছে শ্যাম্পেন চাইছিলেন। লেখক বিস্ময়ের সঙ্গে যখন বলেন যে সেই দোকানের মদ বিক্রি করা লাইসেন্স নেই, মার্কোস প্রত্যুত্তর দেন যে, কাফের পিছনে ড্রয়িং রুমে আফিম, ককেইন, হেরোইন, হাসিস-সব কিছু পাওয়া যায়। একই সঙ্গে তিনি কফি পরিবেশনকারী ছেলেটিকে তামাক সাজতে বলেন। এতে লেখকের বিস্ময় আরও বেড়ে যায় এবং তাঁর মনে হয় যে তিনি যা দেখছেন তা স্বপ্ন, মায়া কিংবা মতিভ্রম কোনোটাই নয়।

৫. “তাঁদের সঙ্গে এ-আলোচনাটা দানা বাঁধে না”-কাদের সম্পর্কে, কেন এ কথা বলা হয়েছে?

উত্তরঃ যাঁরা দেশভ্রমণের আনন্দ জীবনে উপভোগ করতে পারেননি তাঁদের সম্পর্কে উল্লিখিত মন্তব্যটি করা হয়েছে।

  প্রাবন্ধিকের মতে, যাঁরা দেশ-বিদেশ ঘোরেননি তাঁদের সঙ্গে কোনো মনোজ্ঞ কিংবা রসজ্ঞ আলোচনা দানা বাঁধতে পারে না, কারণ সেক্ষেত্রে সব কথাই একতরফা বক্তৃতার মতো হয়ে যায় আর “বক্তৃতা আড্ডার সবচেয়ে ডাঙর দুশমন”।

৬. “আমার তাতে আনন্দই হল।”-এই আনন্দের কারণ কী ছিল?

উত্তরঃ বাঙালির চরিত্রের সঙ্গে আড্ডার গভীর যোগ। এই কারণে আড্ডা নিয়ে বাংলায় অনেক ভালো লেখাও হয়েছে, যা আড্ডাপ্রিয় সৈয়দ মুজতবা আলীকে যথেষ্ট খুশি করেছে। কিন্তু ইংরেজিতে আড্ডা নিয়ে লেখা দেখে তিনি চমৎকৃত হয়েছেন এবং কৌতুক করে বলেছেন- “চন্ডীমণ্ডপের ভশচায এবং জমিদার-হাবেলির মৌলবি যেন হঠাৎ কোটপাতলুন-কামিজ পরে গটগট করে স্টেটসম্যান অফিসে ঢুকলেন।” আড্ডার ইংরেজি-সংস্কৃতির দুনিয়ায় এই অনুপ্রবেশেই লেখক অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছেন।

৭. “কথাটা ঠিকও, ভুলও।”-কোন্ কথা? কেন প্রাবন্ধিক এ কথা বলেছেন?

উত্তরঃ বাঙালি আড্ডাবাজরা দাবি করেন যে, বাংলার বাইরে নাকি আড্ডার চল নেই। এই কথা প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।

   প্রাবন্ধিক মন্তব্য করেছেন যে, একই মাছ বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নামে প্রচলিত। সিন্ধুনদে যে মাছ ধরা পড়ে তার নাম ‘পাল্লা’। আবার নর্মদার স্রোতে ভরোচ শহরে যে মাছ ধরা পরে তার নাম ‘মদার’। গঙ্গা-পদ্মা থেকে ধরা যে মাছ বাঙালিকে আকুল করে তোলে তার নাম ‘ইলিশ’। সেটাই আবার হিন্দি বলয়ে পৌঁছে হয়ে যায় ‘হিলসা’। একই মাছ, কিন্তু দেশভেদে তার নাম আলাদা। রান্নার প্রকরণও আলাদা। বাঙালির মতো রসসিক্ত রান্নার দক্ষতা অবশ্যই তাদের ছিল না। একই কথা প্রযোজ্য আড্ডা সম্পর্কেও। আড্ডা বহু দেশে থাকলেও বাঙালিদের মতো তরিবৎ করে রসিয়ে রসিয়ে আড্ডার মজা নিতে অন্যরা জানে না।

৮. “অপিচ ভুললে চলবে না” -লেখক কী না-ভোলার কথা বলেছেন? প্রসঙ্গটি উল্লেখের কারণ কী?

উত্তরঃ প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছেন যে, বাঙালি তার ইলিশের ব্যঞ্জন নিয়ে অহংকার করতে পারে কিন্তু সিন্ধিরা সেই সরষে ইলিশ খেয়ে নাক সিঁটকান, তাঁদের মনে হয় যে বাঙালিরা একটা ভালো জিনিসকে নষ্ট করে দিয়েছে। আবার ভরোচ-এর মানুষেরা সিন্ধিদের রান্না খেয়ে কান্নাকাটি শুরু করে।

প্রাবন্ধিক প্রসঙ্গটি উল্লেখ করেছেন এ কথা বোঝাতে যে, রান্নার মতোই আড্ডা নিয়েও দেশভেদে মানুষের চিন্তার পার্থক্য থাকবে এবং প্রত্যেকেই নিজের আড্ডাকে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করবে।

৯. “একমাত্র তাঁরাই নাকি আড্ডা দিতে জানেন।”-কারা এই দাবি করেন? তাদের আড্ডার বিশেষত্ব কী?

উত্তরঃ মিশরের কায়রো শহরের যাঁরা আড্ডাবাজ তাঁরা দাবি করেন যে, তাঁরাই যথার্থ আড্ডা দিতে জানেন।

  কায়রোর আড্ডার বিশেষত্ব হল, তাঁদের আড্ডা কখনোই কারোর বাড়িতে বসে না। কারণ, এখানকার আড্ডাবাজরা মনে করেন যে, এতে আড্ডার নিরপেক্ষতা কিংবা গণতন্ত্র লোপ পাবে। কারণ যাঁরবাড়িতে আড্ডা বসে তিনি সকলকে আপ্যায়ন করেন, তাই সকলেই তাঁকে একটু বেশি তোয়াজ করে। সেই কারণে মিশরীয়রা আড্ডার উপযুক্ত জায়গা হিসেবে কাফেকেই পছন্দ করে।

১০. “হরেক জাতের চিড়িয়া সে আড্ডায় হরবকৎ মৌজুদ থাকত।”-কোন্ আড্ডার কথা বলা হয়েছে? ‘হরেক জাতের চিড়িয়া’ বলতে লেখক কী বুঝিয়েছেন তা আলোচনা করো।

উত্তরঃ কায়রো শহরে লেখকরা ‘কাফে দ্য নীল’ নামে যে কাফেতে আড্ডা দিতেন-এখানে সেই আড্ডার কথা বলা হয়েছে।

  ‘কাফে দ্য নীল’-এর আড্ডায় বহু বিচিত্র মানুষের সমাবেশ ঘটত। যেমন- রমজান বে আর সজ্জাদ এফেন্দি নামে দু-জন ছিলেন খাঁটি মিশরীয় মুসলমান, ওয়াহহাব আতিয়া ছিলেন খ্রিস্টান মিশরীয়, জুর্নো ছিলেন ফরাসি, আর মার্কোস ছিলেন জাতিতে গ্রিক এবং আড়াই হাজার বছর ধরে মিশরের অধিবাসী। এই আড্ডাতেই বাংলাদেশের চন্ডীমণ্ডপ এবং জমিদার-হাভেলির আড্ডার প্রতিভূ হিসেবে হাজির ছিলেন লেখক সৈয়দ মুজতবা আলীও।

১১. “অতি উত্তম আরবী কবিতা লেখে…”-কার কথা বলা হয়েছে? কবিতায় তার কোন্ পরিচয় প্রাবন্ধিক দিয়েছেন?

উত্তরঃ উল্লিখিত অংশে ‘কাফে দ্য নীল’ এ আড্ডায় আগত জনৈক ফরাসি জুর্নোর কথা বলা হয়েছে।

  জুর্নো ছিলেন জাতিতে ফরাসি। কবিতা লিখতেন আরবিতে। সে কবিতার বক্তব্য হচ্ছে তলোয়ার চালিয়ে আড়াই ডজন বেদুইনকে ঘায়েল করে প্রিয়তমাকে উটের ওপরে তুলে সে মরুভূমির দিক- দিগন্তে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। সৈয়দ মুজতবা আলী কৌতুক করে বলেছেন যে, আড্ডার সকলেই জানতেন-জুর্নো মরুভূমি দেখেছে শুধু পিরামিডে বেড়াতে গিয়ে এবং তাও জীবনে মাত্র একবার। উট কখনও সে চড়েনি, কারণ ট্রামের ঝাঁকুনিতেই তাঁর বমি হয়ে যায়। আর তলোয়ার সে জীবনে কখনও ধরেনি।

১২. “এমন সময় হঠাৎ খেয়াল গেল…”-কোথায় এবং কেন লেখকের এই মনোযোগ গিয়েছিল লেখো।

উত্তরঃ লেখকের মনোযোগ গিয়েছিল ‘কাফে দ্য নীল’-এর কোণের আড্ডাটির দিকে।

  বিদেশে থাকাকালীন যখন চারপাশের মানুষজনের সঙ্গে প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী খুব একটা পরিচিত হননি, ছন্নছাড়ার মতোই ঘুরে বেড়াতেন যেখানে-সেখানে এবং দেশভ্রমণ যে কতটা পীড়াদায়ক তা নিয়ে যখন একটা বই লেখার জন্য চিন্তাভাবনা শুরু করেছেন, সেই সময়ে কাফেতে প্রতিদিন তাঁর সকাল-সন্ধ্যায় যাতায়াত চলত। এই যাতায়াতের সূত্রেই কাফের কোণের আড্ডাটির দিকে তাঁর নজর যায়। তিনি বোঝেন যে, ওখানে উপস্থিত মানুষগুলোর কফি পান গৌণ। আসলে তারা আড্ডাবাজ। নিজে যেহেতু আড্ডাপ্রিয় ছিলেন স্বাভাবিকভাবেই কোণের সেই আড্ডাটি প্রাবন্ধিকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।

১৩. “মহালগনের বর্ণনা’ আমি আর কি দেব?” -‘মহালগন’ কী? তার যে বর্ণনা শেষপর্যন্ত প্রাবন্ধিক দিয়েছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ উল্লিখিত অংশে ‘মহালগন’ বলতে কাফে দ্য নীল-এর মিশরীয় আড্ডাবাজদের সঙ্গে লেখকের মিলবার মুহূর্তটির কথা বলা হয়েছে।

  বাড়ির নিতান্ত কাছে হওয়ায় সকাল-সন্ধ্যা প্রতিদিন কাফেতে যাওয়া- আসা করতে করতে লেখকের নজর যায় কাফের কোণের আড্ডাটির দিকে। আর হঠাৎই সেই আড্ডারত মানুষগুলিরও নজর পড়ে যায় প্রাবন্ধিকের দিকে। প্রাবন্ধিক কৌতুক করে বলেছেন, শ্রীহরি যেমন শ্রীরাধাতে, ইউসুফ জুলেখাতে, লায়লা মজনুতে, ত্রিস্তান ইজোল্দেতে চার চোখের বিনিময় হয়েছিল, সেই ব্যাকুলতা, গভীর তৃষা এবং ভবিষ্যতের প্রগাঢ় সুখস্বপ্ন তাঁদের দৃষ্টি বিনিময়েও ছিল।

১৪. “তত্ত্বটা হৃদয়ঙ্গম হল সেই ব্রাহ্মমুহূর্তে।”-কোন্ তত্ত্ব? কীভাবে তা প্রাবন্ধিকের হৃদয়ঙ্গম হয়েছিল লেখো।

উত্তরঃ জনৈক ফরাসি কবি বলেছিলেন যে, প্রেমের সবথেকে মহান দিবস সেদিন, যেদিন তিনি প্রথম তাঁর প্রেমিকাকে ভালোবাসার কথা বলেছিলেন।

  শ্রীহরি যখন শ্রীরাধার সঙ্গে, ইউসুফ জুলেখার সঙ্গে, লায়লা মজনুর সঙ্গে, ত্রিস্তান ইজোল্দেতের সঙ্গে চার চোখের দৃষ্টি বিনিময় করছিল তার মধ্যে ধরা পড়েছিল ব্যাকুলতা, গভীর তৃষা এবং ভবিষ্যতের প্রগাঢ় সুখস্বপ্ন। এই একই অনুভূতি লেখক উপলব্ধি করেছিলেন ‘ক্যাফে দ্য নীল’র আড্ডাবাজদের সঙ্গে তার দৃষ্টি বিনিময়ের মুহূর্তে, যা লেখকের মনে হয়েছিল এক ‘ব্রাহ্মমুহূর্ত’। আড্ডাবাজদের মিলনের সেই মহামুহূর্তে লেখক যেন উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন ফরাসি কবির লেখা তত্ত্বটি।

১৫. “করজোড়ে বললুম…”-কখন লেখককে এরকম প্রতিক্রিয়া জানাতে দেখা যায়? তিনি কী বলেছিলেন?

উত্তরঃ কাফের আড্ডার ফরাসি সঙ্গী জুর্নো যখন লেখকের আরবি ভাষায় দখলের প্রশংসা করে, তখনই মাত্র তেরো দিনের সীমিত আরবি জ্ঞানে সমৃদ্ধ লেখক লজ্জিত হয়ে উক্ত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন।

লেখক বলেছিলেন যে, ভারতবর্ষের নীতি হল-সত্য বলবে, প্রিয় বলবে, কিন্তু অপ্রিয় সত্য বলবে না। আর মিশরের নীতি সেখানে আরও এক কদম এগিয়ে। সেখানে ‘প্রিয় অসত্য’-ও বলা যেতে পারে।

১৬. “উৎসাহে উত্তেজনায় ফেটে গিয়ে চৌচির হয়ে আমি শুধালাম”-প্রাবন্ধিকের এই উৎসাহ উত্তেজনায় ফেটে পড়ার কারণ কী ছিল?

উত্তরঃ ‘কাফে দ্য নীল’-এর আড্ডার অন্যতম সদস্য রমজান বে একদিন বলেছিল যে, তার মামা হজ করতে গিয়েছিল আগের বছর। সেখানে কয়েকজন ভারতীয়র সঙ্গে তার আলাপ হয়। তারা নাকি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ত আর বাদবাকি সময় গোটা দিনরাত এক চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিত। তারা যে প্রদেশের মানুষ ছিল, তার নাম রমজান অনভ্যস্তভাবে উচ্চারণ করেছিল ‘বিঙ্গালা’, ‘বাঙীলা’ ইত্যাদি। এই কথার সূত্র ধরেই প্রাবন্ধিক উৎসাহিত এবং উত্তেজিত হয়ে পড়েন, কারণ তিনি উপলব্ধি করেন যে, আসলে প্রদেশটির নাম বাংলা।

১৭. “আমি চোখ বন্ধ করে ভাবলুম….”-লেখক চোখ বন্ধ করে কী ভেবেছিলেন নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ কায়রোর কাফেতে প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী আড্ডার নিয়মিত সদস্য রমজান বে-র কাছে শুনেছিলেন তাঁর মামার এক অভিজ্ঞতার কাহিনি। কিছু ভারতীয় মক্কায় হজ করতে গিয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার বাইরে বাকি সময়টা চায়ের দোকানে আড্ডা দিয়ে কাটাত। রমজানের কথার সূত্রে প্রাবন্ধিক যখন আবিষ্কার করেন যে, সেই লোকগুলি আসলে বাঙালি-তখন তাঁর মধ্যে অদ্ভুত উৎসাহ এবং উত্তেজনা তৈরি হয়। তারপরে নিজেই নিজের সেই উপলব্ধির বিশ্লেষণে ভাবেন যে, রামকৃয়, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল বাঙালি কিন্তু তাঁদের নিয়ে কোনোদিন তিনি এত গর্ব অনুভব করেননি। অথচ মক্কা শহরে যাঁরা আড্ডাবাজ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেলেন; শ্রীহট্ট, নোয়াখালি, চট্টগ্রাম বা কাছাড়ের খালাসি এবং খিদিরপুরে আড্ডা মারতে শেখা সেই মানুষগুলো ‘হেলায় মক্কা করিলা জয়’। এই সাফল্যেই তিনি নিজেকে গর্বিত ভাবতে থাকেন।

১৮. “কাইরোতে তামাক।”-কোন্ প্রসঙ্গে বক্তা এই বিস্ময় প্রকাশ করেছেন? কায়রোতে তামাকসজ্জার যে বর্ণনা প্রাবন্ধিক দিয়েছেন, তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ কায়রোর কাফেতে আড্ডার গ্রিক সদস্য মার্কোস কফি পরিবেশনকারী ছেলেটিকে তামাক সাজার কথা বলেছিলেন। সেই কথা শুনেই প্রাবন্ধিক বিস্ময় প্রকাশ করেছেন।

  সেখানে তামাক সাজা ছিল এক রাজকীয় আয়োজন। ফারসি হুঁকো, কিন্তু তাতে হনুমানের ল্যাজের মতো সাড়ে তিন কেজি দরবারি নল নেই, লেখকের কথায়, “সমস্ত জিনিসটার গঠন কেমন যেন ভোঁতা ভোঁতা,” একটু গ্রাম্যপ্রকৃতির। তবে ছিলিমটা ছিল বেশ বড়ো আকৃতির। একপো পরিমাণ তামাক হেসেখেলে তার ভিতরে দেওয়া যেতে পারে। সঙ্গে তাওয়াও ছিল। তবে সবথেকে যেটা উল্লেখযোগ্য ছিল, তা হল তামাকের খুশবু। বহুদিন পরেও তা লেখকের নাকে লেগেছিল।

১৯. “মিশরীরাও ঠিক সেই রকম সুগন্ধ-তত্ত্ব সম্পূর্ণ ভুলে যায়নি।”-‘ঠিক সেই রকম’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে? মিশরীয়দের এই ভুলে না যাওয়ার নিদর্শন কী?

উত্তরঃ রসায়নবিদ্যায় ভারতীয়দের যে দক্ষতা ছিল, পাঠান এবং মোঘল যুগে তার অবলুপ্তি ঘটলেও ভারতবাসী তা সম্পূর্ণ বিস্মৃত হয়নি। তার প্রমাণ- আজও ভারতীয়রা মকরধ্বজ, চ্যবনপ্রাশ বানাতে পারে। ‘ঠিক সেই রকম’ বলতে এই বিষয়ের দিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে।

  মিশরীয়রাও যে তাদের সুগন্ধ তত্ত্ব ভুলে যায়নি, তার বড়ো প্রমাণ ইজিপশিয়ন সিগারেট, যেখানে তামাকের সঙ্গে খুশবু যোগ করেও তামাকের স্বাদটাকে তারা হুবহু বজায় রাখতে পারে।

২০. “তখন রাস্তার লোক পর্যন্ত উন্নাসিক হয়ে থমকে দাঁড়ায়” -কেন মানুষদের মধ্যে এরকম প্রতিক্রিয়া হয় নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ যখন কোনো দক্ষ তামাক-কদরদারের তত্ত্বাবধানে কায়রোর কাফেতে তামাক সাজা হয়, তারপরে সেই সমঝদার তামাকের নীলাভ ধোঁয়াটি তাঁর নাকের ভেতর দিয়ে ছাড়তে থাকেন, আর নীলনদের মন্দমধুর ঠান্ডা হাওয়া সেই ধোঁয়ার সঙ্গে ‘রসকেলি করে তাকে ছিন্নভিন্ন করে’ কাফে-র সর্বত্র সেই সুগন্ধ ছড়িয়ে দেয়,’-সেই সুবাসের স্বাদ পেয়ে রাস্তার মানুষেরা কাজ ভুলে উন্নাসিক হয়ে থমকে দাঁড়ায়। আর আসক্ত সিগারেট-খোর বা পাইকারি সিগারেট-খোর সকলেই বুকের ওপরে হাত রেখে আসমানের দিকে তাকিয়ে পরম ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেয় সেই অপার্থিব সুবাসের স্বাদ নিতে পারার জন্য।

রচনাধর্মী : আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda [প্রশ্নমান – ৫]

১. “এ আড্ডার সদস্যদের সবাই সবজান্তা।”-কোন্ আড্ডার কথা বলা হয়েছে? লেখককে অনুসরণ করে সেই আড্ডার পরিচয় দাও। 

উত্তরঃ উল্লিখিত অংশে সৈয়দ মুজতবা আলী তাঁর বাড়ির পাশের সেমিরামিস কাফের আড্ডার কথা বলেছেন।

  সেমিরামিস কাফের সদস্যরা খুব কুলীন নয়। লেখকের মতে, চ্যাংড়া, কলেজ-পড়ুয়া, কেরানি, অথবা বেকার কিংবা ইনশিওরেন্সের এজেন্ট সেই আড্ডার সদস্য। তাদের আলোচনার বিষয়বস্তু আপাতভাবে রাজনীতি হলেও আসলে পরচর্চা। যেমন, কোন পাশার স্ত্রী কোন মন্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া করেন বলে তার বোনপো ভালো চাকরি পেয়ে গেল ইত্যাদি। তাদের সাহিত্য-আলোচনা কোন্ প্রকাশক এক হাজারের নাম করে তিন হাজার ছাপিয়ে দু-পয়সা কমিয়ে নিয়েছে এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকত। এরা যেন মিশর এবং গোটা পৃথিবীর সমস্ত ‘গুহ্য ও গরম’ খবর রাখত।

২. “হায়, দুনিয়া, তুমি জানছো না তুমি কি হারাচ্ছো।” কোন্ প্রসঙ্গে লেখক এ কথা বলেছেন তা নিজের ভাষায় লেখো।

উত্তরঃ বাড়ির পাশের সেমিরামিস কাফেতে লেখক দেখেছিলেন সবজান্তা আড্ডাবাজদের, যারা রাজনীতি অথবা সাহিত্য কোনো কিছুরই গভীর আলোচনায় না গিয়ে পরনিন্দা-পরচর্চায় ব্যস্ত থাকত এবং তাদেরকে দেখে মনে হত তারা সকলেই সবজান্তা। এদের কথাবার্তা এবং হাবভাব দেখলে মনে হত “এদের প্রত্যেকের চোখের সামনে এক অদৃশ্য অশ্রুত টেলিপ্রিন্টার খবর জানিয়ে যাচ্ছে”, যার উৎস হল রাশিয়ার বেরিয়া, জার্মানির হিমলার আর কলকাতার টেগার্ট। তাদের সাহায্য ছাড়া গোটা পৃথিবীর সরকারগুলোর চলা সম্ভব কিনা সে বিষয়ে মনে প্রশ্ন জাগতে পারে এবং এরা যদি কোনো শহরের বড়োকর্তা হয় তাহলে পৃথিবীর সমস্ত সমস্যার সমাধান এক মুহূর্তে হয়ে যাবে এরকমটাও মনে হতে পারে। এদের প্রসঙ্গেই ব্যঙ্গ করে লেখক উল্লিখিত মন্তব্যটি করেছেন।

৩. “বাড়ির আড্ডায় ‘মেল’ মেলেনা”-এরূপ উক্তির কারণ কী? লেখক কোথায়, কাদের সঙ্গে আড্ডা দিতেন?

উত্তরঃ ‘আড্ডা’ নিবন্ধে সৈয়দ মুজতবা আলী বলেছেন যে, কায়রোর আড্ডা কখনও কোনো অবস্থাতেই কারোর বাড়িতে বসত না, কারণ কায়রোর আড্ডাবাজরা মনে করতেন যে, আড্ডার নিরপেক্ষতা বা গণতন্ত্র কোনোটাই বাড়ির আড্ডায় বজায় থাকত না। তার কারণ, যাঁর বাড়িতে আড্ডা বসত তিনি যেহেতু সকলকে আপ্যায়ন করতেন তাই তাঁর বাড়তি খাতির হত। একারণে আড্ডায় যাঁরা বিশেষভাবে পরীক্ষিত তাঁরা মনে করতেন যে, বাড়ির আড্ডায় আড্ডার যথার্থ মজা পাওয়া যায় না।

   লেখকদের আড্ডা বসত ‘কাফে দ্য নীল’ বা ‘নীলনদ কাফে’তে। সেখানে নানাধরনের মানুষ আড্ডার সদস্য ছিলেন। যেমন, রমজান বে আর সাজ্জাদ এফেন্দি ছিলেন খাঁটি মিশরীয় মুসলমান, ওয়াহহাব আতিয়া ছিলেন কপ্ট ক্রিশ্চান এবং খাঁটি মিশরীয়, কারণ তিনি মনে করতেন তাঁর শরীরে আছে ফ্যারাওদের রক্ত। আড্ডায় ছিলেন ফরাসি জুর্নো, যিনি বীরত্বব্যঞ্জক আরবি কবিতা লিখতেন। আড্ডার সদস্য ছিলেন জাতিতে গ্রিক মার্কোস, যিনি দাবি করতেন প্রায় আড়াই হাজার বছর ধরে তাঁরা মিশরে আছেন এবং মিশরের রানি ক্লিয়োপেট্রার সঙ্গে তাঁর আত্মীয়তা আছে। তাঁদের সঙ্গেই বাংলার চন্ডীমণ্ডপ এবং জমিদার-হাভেলির আড্ডার একমাত্র প্রতিভূ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন লেখক সৈয়দ মুজতবা আলী।

Class 11 Question and Answer | একাদশ শ্রেণীর সাজেশন

আরো পড়ুন:-

Class 11 Bengali Suggestion Click here

আরো পড়ুন:-

Class 11 English Suggestion Click here

আরো পড়ুন:-

Class 11 Geography Suggestion Click here

আরো পড়ুন:-

Class 11 History Suggestion Click here

আরো পড়ুন:-

Class 11 Political Science Suggestion Click here

আরো পড়ুন:-

Class 11 Philosophy Suggestion Click here

আরো পড়ুন:-

Class 11 Sanskrit Suggestion Click here

আরো পড়ুন:-

Class 11 Education Suggestion Click here

আরো পড়ুন:-

Class 11 Sociology Suggestion Click here

West Bengal class 10th Bengali Board Exam details info

West Bengal Council of Higher Secondary Education (WBCHSE) Class 11 Exam Bengali Question and Answer download for Bengali subject. West Bengal Council of Higher Secondary Education will organise this Examination all over West Bengal. Students who are currently studying in Class 10th, will sit for their first Board Exam Class 11. WBCHSE Class 11 Bengali question paper download.

Class 11 Bengali Adda Syllabus

West Bengal Class 11 Bengali Adda Syllabus with all the important chapters and marks distribution. Download the Class 11 Bengali Adda Syllabus and Question Paper. Questions on the Bengali exam will come from these chapters. All the chapters are equally important, so read them carefully.

Class 11 Bengali Syllabus Download Click Here

আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda Question and Answer 

আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda Question and Answer : আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda Question and Answer – আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda Question and Answer উপরে আলোচনা করা হয়েছে।

West Bengal WBCHSE Class 11 Bengali Adda Question and Answer | আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা 

West Bengal WBCHSE Class 11 Bengali Adda Question and Answer | আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা : Class 11 Bengali Adda Question and Answer Question and Answer | আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – West Bengal WBCHSE Class 11 Bengali Adda Question and Answer | আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা উপরে আলোচনা করা হয়েছে।

Class 11 Bengali Adda  Question and Answer | আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর 

Class 11 Bengali Adda Question and Answer | আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর : Class 11 Bengali Adda Question and Answer | আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর – Class 11 Bengali Adda Question and Answer | আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা প্রশ্ন ও উত্তর গুলো উপরে আলোচনা করা হয়েছে।

আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda Question and Answer 

  এই “আড্ডা (প্রবন্ধ) একাদশ শ্রেণীর বাংলা | Class 11 Bengali Adda Question and Answer” পোস্টটি থেকে যদি আপনার লাভ হয় তাহলে আমাদের পরিশ্রম সফল হবে। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গ বোর্ডের সিলেবাস অনুযায়ী সমস্ত শ্রেণীর প্রতিটি অধ্যায় অনুশীলন, বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার গাইডেন্স ও চারীর খবর বা শিক্ষামূলক খবর জানতে  আমাদের এই  Porasuna.in ওয়েবসাইটি দেখুন, ধন্যবাদ।